বৃত্তের পরিধি ও বৃত্তের পরিধির সূত্র কি
এই টিউটোরিয়ালটি শেষে ...
বৃত্তের পরিধি কাকে বলে তা বর্ণনা করতে পারা যাবে।
বৃত্তের পরিধির সূত্র কি তা উদ্ভাবন করতে পারা যাবে।
ব্যাসের ভিত্তিতে বৃত্তের পরিধি নির্ণয় করতে পারা যাবে।
ব্যাসার্ধের ভিত্তিতে বৃত্তের পরিধি নির্ণয় করতে পারা যাবে।
ক্ষেত্রফলের ভিত্তিতে বৃত্তের পরিধি নির্ণয় করতে পারা যাবে।
বৃত্তের পরিধি সংশ্লিষ্ট দৈনন্দিন জীবনের সমস্যার সমাধান করতে পারা যাবে।
বৃত্তের পরিধি কাকে বলে
বৃত্তের চারদিকের সীমান্ত বরাবর দুরত্বকে বৃত্তের পরিধি বলে।

দ্বিমাত্রিক জ্যামিতিতে বৃত্ত হলো সুষম আবদ্ধ একটি বক্রাকার চিত্র বা বক্ররেখা। তাই বৃত্ত মূলতঃ একটি বদ্ধ বক্ররেখা। একটি বৃত্ত-বক্ররেখার যেকোনো স্থানে কেটে বক্ররেখাটিকে সোজাসুজি টান করলে যে রেখাংশ তৈরি হয়, সেই রেখাংশের দৈর্ঘ্যকে বৃত্তটির পরিধি বলে। আবার বৃত্ত হলো একটি ডিস্কের ধার বা সীমানা। সেই কারণে পরিধি হলো পরিসীমার একটি বিশেষ রূপ। দ্বিমাত্রিক জ্যামিতিতে, পরিসীমা হলো বহুভুজের বাহুগুলোর দৈর্ঘ্যের সমষ্টি। বৃত্ত, উপবৃত্ত ইত্যাদি কিছু দ্বিমাত্রিক গোলাকার আকার-আকৃতির ক্ষেত্রে, আকৃতিটির চতুর্দিকের মোট দৈর্ঘ্য বা দুরত্বকে পরিধি বলা হলেও বেশিরভাগ দ্বিমাত্রিক আকার-আকৃতির চারদিকের বাহুগুলোর দৈর্ঘ্যের সমষ্টিকে পরিসীমা বলা হয়। যেমন - ত্রিভুজ, চতুর্ভুজ, রম্বস, বর্গক্ষেত্র ইত্যাদি এরা প্রত্যকেই এক একটি বহুভুজ। এসব বহুভুজের বাহুগুলোর দৈর্ঘ্যের সমষ্টি পরিসীমা বলে পরিচিত। পক্ষান্তরে, উপবৃত্তের চতুর্দিকের ধারের দুরত্ব পরিধি বলে অভিহিত।
উল্লেখ্য, পরিধি হলো বৃত্তের চারদিকের দুরত্ব। কিন্তু, প্রাথমিক জ্যামিতির মৌলিক ধারণাসমূহে, দুরত্ব বলতে সরলরৈখিক দুরত্বকেই বুঝায়। সেদিক দিয়ে বিবেচনা করলে পরিধির সংজ্ঞা প্রদানের ক্ষেত্রে ”দুরত্ব” শব্দটিকে ব্যবহার করা চলে না। সেক্ষেত্রে পরিধির সংজ্ঞা প্রদানের ক্ষেত্রে, বৃত্তে অন্তর্লিখিত সুষম বহুভুজের পরিসীমার লিমিট (limit) এর ধারণার সাহায্য নেওয়া হয়।
যেকোনো বৃত্তের উপর ক্লিক করে বড় করা যায়।
বৃত্তের পরিধির সূত্র
বৃত্তের পরিধি একাধিকভাবে নির্ণয় করা যায়। তবে যেভাবেই পরিধি নির্ণয় করা হোক না কেন, বৃত্তের পরিধির সূত্র কি - তা উদ্ভাবনের আগে π সম্পর্কে ধারণা থাকা আবশ্যক। π হলো গণিতের খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং অতি আলোচিত একটি ধ্রূবক। এটি একটি গ্রিক অক্ষর। π হলো বৃত্তের পরিধি ও ব্যাসের অনুপাত। বৃত্তের পরিধি : বৃত্তের ব্যাস = ২২ : ৭ অর্থাৎ, π = ২২৭
ব্যাসের ভিত্তিতে বৃত্তের পরিধি নির্ণয়
ব্যাসের ভিত্তিতে একই সাথে বৃত্ত অঙ্কন, ব্যাসার্ধ এবং পরিধি নির্ণয় এ্যাপ
ব্যাসার্ধ = 5
পরিধি ≈ 31.4159
বিভিন্ন পরিমাপের ব্যাস বসিয়ে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
একটি বৃত্তের ব্যাস জানা থাকলে বৃত্তের পরিধির সূত্র কি তা নির্ণয় করা যায়। মনেকরি, একটি বৃত্তের পরিধি C এবং ব্যাস d. তাহলে π এর সংজ্ঞা থেকে পাওয়া যায়,
π = Cd
∴ C = πd
সুতরাং, বৃত্তের পরিধি = π × ব্যাস
বৃত্তের পরিধি C এবং ব্যাস d হলে,
C = πd
ব্যাসার্ধের ভিত্তিতে বৃত্তের পরিধি নির্ণয়
ব্যাসার্ধের ভিত্তিতে একই সাথে বৃত্ত অঙ্কন এবং পরিধি নির্ণয় এ্যাপ
ব্যাসার্ধ = 7
পরিধি ≈ 43.9823
বিভিন্ন পরিমাপের ব্যাসার্ধ বসিয়ে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
একটি বৃত্তের ব্যাসার্ধের উপর ভিত্তি করে বৃত্তের পরিধির সূত্র কি তা নির্ণয় করা যায়। মনেকরি, একটি বৃত্তের পরিধি C, ব্যাস d এবং ব্যাসার্ধ r. তাহলে π এর সংজ্ঞানুসারে,
π = Cd
কিন্তু ব্যাস হলো ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ। অর্থাৎ, d = 2r.
তাহলে, d এর মান উপরোক্ত সম্পর্কে বসালে দাঁড়ায়,
π = C2r
∴ C = 2πr
সুতরাং, বৃত্তের পরিধি = 2π × ব্যাসার্ধ
বৃত্তের পরিধি C এবং ব্যাসার্ধ r হলে,
C = 2πr
ক্ষেত্রফলের ভিত্তিতে বৃত্তের পরিধি নির্ণয়
ক্ষেত্রফলের ভিত্তিতে একই সাথে বৃত্ত অঙ্কন, ব্যাসার্ধ এবং পরিধি নির্ণয় এ্যাপ
ব্যাসার্ধ ≈ 6.2317
পরিধি ≈ 39.1548
বিভিন্ন পরিমাপের ক্ষেত্রফল বসিয়ে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
একটি বৃত্তের ক্ষেত্রফলের উপর ভিত্তি করে বৃত্তের পরিধির সূত্র নির্ণয় করা যায়। মনেকরি, একটি বৃত্তের ব্যাসার্ধ r, পরিধি C এবং ক্ষেত্রফল A. তাহলে
A = πr2 ..... (1)
C = 2πr ..... (2)
এখন, (1) নং সমীকরণ থেকে পাওয়া যায়,
A = πr2
বা, r2 = Aπ
∴ r = √A√π
তাহলে, r এর মান (2) নং সমীকরণে বসালে দাঁড়ায়,
C = 2π.√A√π
বা, C = 2√π √A
∴ C = 2√πA
বৃত্তের পরিধি C এবং ক্ষেত্রফল A হলে,
C = 2√πA